বাংলাদেশের ব্যাংকের ভল্টে মজুদকৃত স্বর্ণ সঠিকই রয়েছে জানিয়েছেন : অর্থ প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের ব্যাংকের ভল্টে সোনার ক্যারেটের পরিমাণ ও এর মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ওঠেছে সমালোচনা ও সন্দেহ । দেশের বিভিন্ন শ্রদ্ধেয়ভাজন ব্যক্তিবর্গ ভল্টে মজুদ থাকা সোনার ব্যাপারে নানা সমালোচনা ও মতামত জানাচ্ছেন কেউ বা এর পক্ষে ও বিপক্ষে কথা বলছেন। আজ বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ নির্বাহীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠক। এর পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে সর্বশেষ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান দাবি করেছেন : ভল্টে রক্ষিত সকল মজুদকৃত সোনা ঠিকই আছে।
প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন : সরকারি কাজ করতে গেলে কিছু ভুল ধারণা বা জ্ঞানগত ফারাক সৃষ্টি হতেই পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনার মজুদ সম্পর্কে ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে। ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে ৪০-৮০ এর একটি ব্যাপার প্রকাশ হয়ে গেছে। সোনার ওজন পরিমাপে কম-বেশির ফারক তৈরি হয়েছে যা ভুলের কারণে হতেই পারে। উভয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে বলেছেন সোনার ব্যাপারে কিছুই হয়নি। প্রতিবেদন তৈরিতে কিছু আমলাতান্ত্রিক গাফিলতি তৈরি হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন।আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সাথে জড়িত তাদের শাস্তির ব্যাপারে তিনি বলেন : প্রথমে পুরো বিষয়টি একটি পর্যালোচনার ব্যাপার রয়েছে । আমরা তা করব পরবর্তিতে এ নিয়ে একটি মিটিং এর ব্যবস্থা করে সকলের সাথে আলোচনা করা হবে পুরো বিষয়টি আসলে কি ঘটেছিল।
চোরাচালানের দায় আটকৃত সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের মজুদ করার সময় বেশিরভাগ সোনার ক্ষেত্রে বিশেষ গড়মিল লক্ষ্য করা যায়।প্রতিটি ক্ষেত্রেই ২২ ক্যারেটের স্থলে ১৮ ক্যারেট হিসেবে উল্লেখ করে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এতে করে আটককৃত সোনা পরবর্তীতে নিলাম বা ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে বিক্রি করলে সোনার ক্যারেট অনুযায়ী সোনার দামের হেরফেরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে সরকার, আর সুবিধা পাবে সোনা ক্রেতারা। বাংলাদেশ ব্যাংকে মজুদকৃত স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের নথি পরদর্শন সংক্রান্ত এক গোপনীয় প্রতিবেদনে এ আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মজুদকৃত স্বর্ণের অমিল নিয়ে গতকাল প্রথম আলো পত্রিকার বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কান্ড শীর্ঘক সংবাদ প্রকাশিত করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ভল্টে জমা রাখা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের বার ও আংটি মিশ্র বা সংকর ধাতু হয়ে গেছে। স্বর্ণ ছিল ২২ ক্যারেট হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট। বিভিন্ন পদ্ধতিতে নির্বাচন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৯৬৩ কেজি স্বর্ণের পরীক্ষা করে বেশির ভাগের মধ্যো এ ধরনের অমিল ও পার্থক্য ধরা পড়ে। প্রতিবেদনটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে মজুদকৃত স্বর্ণ পরিদর্শন কার্যক্রমের পরিচালনা করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। গত জানয়ারিতে কমিটি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি মাসে প্রতিবেদকৃত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডোর চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়। পরিদর্শন দল ভল্টে রাখা সোনার পরিদর্শন শেষে কিছু পর্যবেক্ষণ অমিল প্রকাশ করেন। তার মধ্যো প্রথম পর্যবেক্ষন ছিল একটি সোনার বার ও আংটি নিয়ে। পরে এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ কেন্দ্রী ব্যাংক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। সেখানে তারা দাবি পেশ করেন , জমা রাখা সোনার পরিমাণে কোন হেরফের হয়নি। সোনার পরিমাণ একই আছে। বাংলা চার আর ইংরেজী আট দেখতে একই রকম বলে লিখতে ভুল হয়েছিল। এটি একটি করণিক ভুল ছিল।
আমাদের সাথে যুক্ত হতে চাইলৈ : ফেসবুক পেইজ | | ফেসবুক গ্রুপ
0 মন্তব্য সমূহ: