এই মাত্র
লোডিং...
মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী কাদের জন্য উপযোগী ?

মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী কাদের জন্য উপযোগী ?

বাংলাদেশে বর্তমানে স্নাতক শেষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ডিং ড্রিগ্রি হচ্ছে মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী । কিন্তু অনেকের মাঝেই এখন এই প্রশ্ন “এমবিএ ডিগ্রী” অর্জন করা আসলে কাদের জন্য উপযোগী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ব্যবসা যোগাযোগ পরামর্শক সাইফ নোমান খান এ প্রসঙ্গে একটি পত্রিকায় বলেছেন : কারা, কখন, কেন এমবিএ বা মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রী অর্জন করবেন।

মাস্টার্স অব বিজনেস

মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী

মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন

বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রতিবছর ঠিক কতজন শিক্ষার্থী মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ কোর্সে ভর্তি হয় তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে পরিসংখ্যান নেই বলে এর সংখ্যা খুব কম তা বলারও অবকাশ নেই। কারণ একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবছরের এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর সংখ্যায় আপনাকে অবাক করার মত তথ্য দিতে সক্ষম। শিক্ষার্থীদের মধ্য  এখন দেখা যায় তারা প্রকৌশলে পড়ে এমবিএ তে ভর্তি হচ্ছে। ভর্তি হওয়ার দুই-তিন সেমিষ্টার পর দেখা যায় তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে কিংবা বুঝতে পারে আসলে এমবিএ ডিগ্রী হয়ত তার জন্য উপযোগী নয়।
সাধারণ আমরা মনে করি, যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী বা দক্ষ ব্যবস্থাপক হতে চান তারাই এমবিত্র ডিগ্রী অর্জন করেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমবিএ ডিগ্রী একটু ভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। আমাদের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগ এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের প্রধান লক্ষ হচ্ছে চাকুরীর বাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা, শিক্ষা গ্রহণ এখানে নিছক একটি পন্থা মাত্র। অনেক শিক্ষার্থীরা তারা এমবিএ ডিগ্রী অর্জনকে মনে করেন নিছক একটি ডিগ্রী অর্জন বা সিভিতে যোগ করার মতো ভাল একটি উপাদান যা দ্বারা চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষকের চোখে অনেকর মধ্যে একজন হওয়ার শক্তিশালী হাতিয়ার স্বরুপ। সত্যিই কি তাই ? পদার্থবিজ্ঞান বা আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিষয়ের ওপর পড়ালেখা করে পড়ে অনেকেই এমবিএ করেছেন : কিন্তু সবার লক্ষ্য ঠিক একই ছয় অঙ্কের বেতন তবে শুধু ভালো বেতন কিংবা আকর্ষণীয় পেশার জন্য এমবিএ করা বোধ হয় ভুল হয়ে যাবে।
বর্তমানে দেখা যায় অনেক চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠান যেকোন পদের বিজ্ঞাপনে এমবিএ ডিগ্রীধারীদের উল্লেখ করেন। প্রকৃতপক্ষে ঐ চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ্য পদের সাথে এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের কোন সম্পর্কই নেই। অথচ এমিবএ কিন্তু সব পদের জন্য নয় । ডিগ্রির চেয়ে কারিগরি জ্ঞানকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এমবিএ ডিগ্রী থাকলেই যে একজন ভালো কর্মী হবেন এর তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। সবগুলো দিক বিবেচনায় আনলে এমবিএ করার এই ট্রেন্ড তৈরির পেছনে শুধু যে শিক্ষার্থীরা দ্বায়ী তা নয় বরং একটি গোষ্টী পরিকল্পনা মাফিক তাদের স্বার্থ হাছিল করার চেষ্ঠা করতে চলেছে প্রতিনিয়ত।

 মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী কাদের জন্য উপযোগী ?

কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কিংবা নির্বাহী পর্যায়ের কাজ করতে চাইলে এমবিএ একটি কার্যকর ডিগ্রি হতে পারে। তাই বলে স্নাতক যে বিষয়েই হোক না কে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পড়াশোনাটা যে ব্যবসায় প্রশাসন নিয়েই হতে হবে এটা সঠিক নয়। এমবিএ যেহেতু একটি ব্যবহারিক ডিগ্রী  তাই আপনাকে সময় ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে হবে। যে পেশায় কাজ করতে ইচ্ছুক প্রথমে কয়েক বছর সম্পৃকত পেশায় কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিন। পেশাজীবন কোন পথে এগোচ্ছে সেটা বুঝুন । চাকুরীর পাশাপাশি এমবিএ করতে চাইলে আপনি ঠিকমতো সময় দিতে পারবেন কি না, সেটাও বিবেচনা করুন। কাজের মাধ্যমে আপনাকে বুঝতে হবে এমবিএ ডিগ্রী আসলে আপনার জন্য কতটা প্রয়োজন ।

 মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ ডিগ্রী কখন গ্রহণ করবেন ?

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে এমবিএ করা শিক্ষার্থীদের গড় বয়সের অনুপাত ২৭ বছর। দেখা গেছে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী ভারতীদের মধ্যে এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের আগ্রহ সর্বাপেক্ষা বেশি। অপর দিকে ইন্ডিয়ান ইনষ্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট আহমেদাবাদে এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদে গড় বয়স ৩৪ বছর, তার ওপর ভর্তির জন্য সাড়ে ১০ বছর কাজের অভিজ্ঞাতা থাকতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এমবিএ পড়ুয়াদের গড় বয়স ২৭-২৮ বছর। গত কয়েক বছরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যলয়ে যারা এমবিএর জন্য ভর্তি হয়েছেন তাদের গড় বয়স ২৭ বছর। অনেক বিজনেস স্কুলেই এমবিএ ডিগ্রির জন্য ভর্তি হতে হলে ৩ থেকে ৪ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করেই এমবিএর ক্লাস শুরু করেন।এমবিএ ডিগ্রির মূল লক্ষ্য শুধু ডিগ্রী অর্জন নয় বরং কাজের অভিজ্ঞতা মুখ্য বিষয়। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে পেশাজীবনকে এক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার একটা কার্যকারী মাধ্যম হতে পারে।

আপনি একজন শিক্ষার্থী হিসেবে স্নাতক কোন বিষয়ে পড়েছেন এবং কোন ক্ষেত্রকে নিজের পেশা বা ক্যারিয়ার হিসেবে গড়তে ইচ্ছুক এই সবগুলো বিষয় মাথায় রেখে পড়ে সিদ্ধান্ত নিন। সর্বশেষ একটি কথা : সবাই এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করছে বলে তাই আমাকেও এই ডিগ্রী অর্জন করতেই হবে এমন ভাবনা থেকে কখনোই এমবিএ শুরু করা ঠিক হবে না।

আমাদের সাথে যুক্ত হতে চাইলৈ : ফেসবুক পেইজ | | ফেসবুক গ্রুপ
উপরোক্ত তথ্য সম্পর্কিত কোন মতামত জানাতে চাইলে কমেন্ট করুন এবং শেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন

0 মন্তব্য সমূহ:

0